আমাদের শরীরে যখন ইউরিক এসিডের মাত্রা বেড়ে যায় তখন অনেক সমস্যা হয়। ইউরিক এসিড হচ্ছে পিউরিন নিওক্লিওটাইডের বিপাকীয় ভাঙ্গনের ফলে তৈরি দ্রব্য আর এটা মূত্রের এক্টি সাধারণ উপাদান। ইউরিক এসিডের উচ্চ রক্তপ্রবাহ গেঁটেবাঁতের দিকে ধাবিত করে এছাড়া এটা ডায়াবেটিস ও অ্যামোনিয়াম এসিড ইউরেট কিডনিতে পাথর সৃষ্টির মত শারীরিক অবস্থার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। তাই আমাদের ইউরিক এসিড কমাতে হবে। এই জন্যে কিছু খাবার খেতে পারেন যা অনেক কার্যকর।
সঠিক পরিমাণে পানি পান
বিশুদ্ধ পানি যেমন করে আমাদের দেহ হতে টক্সিনকে বের করে দেয়, ঠিক একইভাবে সঠিক পরিমাণে পানি পান করলে অতিরিক্ত ইউরিক এসিড শরীর হতে বেরিয়ে যায়। সুতারং, আমাদের প্রতিদিন অন্তত ১০-১২ গ্লাস পানি পান করা উচিত।
ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ
ইউরিক এসিডের মাত্রা কমাতে ফাইবার সমৃদ্ধ খাদ্যের জুড়ি নেই। তাই নিয়মিত খাবারের তালিকায় গোটা শস্য, শাকসবজি এবং ফলমূল, ওটস, ইসবগুলের ভুষি ইত্যাদি রাখতে পারেন।
ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ড মেডিক্যাল সেন্টারের গবেষণায় দেখা যায় যে, নিয়মিত ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করলে শরীরের ইউরিক এসিডের মাত্রা কমে যায়।
মূলত ডায়াটেরি ফাইবার ব্লাডস্ট্রিমে থাকা অতিরিক্ত ইউরিক এসিড শরীর হতে বের করে দিতে সাহায্য করে।
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ
গবেষণায় দেখা গেছে যে দৈনিক ৫০০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করলে খুব অল্প সময়ের ভেতর ইউরিক এসিডের লেভেল কমে যায়। ভিটামিন সি অতিরিক্ত ইউরিক এসিডকে ইউরিনের মাধ্যমে বের করে দেয়। সুতরাং, ইউরিক এসিড কমাতে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার যেমন লেবু, আমলকী, আমড়া, পেয়ারা, কমলা খান নিয়মিত।
আনারস
ইউরিক এসিড কমাতে আনারস ভীষণ কার্যকর একটি ফল। মানবদেহের জন্যে দৈনিক যে পরিমাণ ভিটামিন সি এর প্রয়োজন তার ১০০%-ই ১ কাপ আনারস খেলে পূরণ হবে। আর অন্যান্য ফলের তুলনায় আনারসে ফ্রুক্টোজের পরিমাণ অনেক কম। তাই বাড়তি চিন্তার কোন কারণ নেই।
এছাড়া আনারসে আছে ব্রোলামিন নামক এনজাইম যা প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। সুতরাং, যারা ইউরিক এসিড কমাতে চান তারা দৈনিক কিছুটা হলেও আনারস খান।
লো ফ্যাট মিল্ক, টক দই এবং ডিম
হাইপার ইউরেসেমিয়া কমাতে এবং সেই সঙ্গে আপনার শরীরের প্রোটিনের চাহিদা পূরণের জন্য বেছে নিন লো ফ্যাট মিল্ক, লো ফ্যাট দই এবং কুসুম ছাড়া ডিম।
অলিভ অয়েল
আপনার রান্নার কাজে পরিমিত তেল ব্যবহার করুন। আর রান্নাতে ব্যবহার করুন অলিভ অয়েল। অলিভ অয়েলে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে রয়েছে প্রদাহবিরোধী উপাদান। আর এটা অতিরিক্ত ইউরিক এসিডের কারণে সৃষ্ট জয়েন্টের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
আপেল
আপেলে থাকা ম্যালিক এসিড ইউরিক এসিড নিউট্রালাইজড করতে খুব কার্যকরী। তবে আপেলে ফ্রুক্টোজের পরিমাণ বেশি থাকে তাই খুব বড় সাইজের নয়, প্রতিদিন খাবার পর ছোট একটি আপেল রাখুন আপনার খাদ্যের তালিকায়।
সুতরাং, আপনারা যারা ইউরিক এসিড কমাতে চান মেডিসিনের পাশাপাশি উপরের নির্দেশিকা মেনে চলুন আর সুস্থ থাকুন সহজেই। শুভ কামনা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন