তাসনুভা কথা শেষ করার আগেই আরিয়ান ওর মিষ্টি ঠোঁটটি নিজের করে নেয়। আরিয়ান চায় না তাসনুভা এমন কোন কথা বলুক। তাই কথা শেষ করার আগেই ওকে এভাবে থামিয়ে দেয় আরিয়ান৷ ও আসলেই একটি সাইকো। ভালবাসার সাইকো ও। তাসনুভা তা ভালো ভাবেই বুঝতে পেরেছে। আরিয়ানের গভীর স্পর্শে তাসনুভা শান্ত হয়। আর অনেক লজ্জা পেতে থাকে।
আরিয়ান তাকে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে বলে,
- পাগলিটি আমি কোথাও যায় নি। এই যে তোমার কাছেই তো আছি। শুধু আমার হবু শ্বশুর শ্বাশুড়িকে এখানে নিয়ে আসায় ব্যবস্থা করতে গিয়েছিলাম। বুঝেছো?
~ সত্যিই?
- জি। এখন হয়তো তারা রওনাও দিয়ে ফেলেছে।
~ ইয়েএএ.....জানেন খুব ভয়ে পেয়েছিলাম। ভেবেছি আর দেখাই হবে না বাবা-মার সাথে।
- আমি থাকতে কোন ভয় নেই তোমার। তোমার সব ভয় চিরতরে শেষ করে দিব আমি। আর কখনো কেউ তোমার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। শুধু একটু অপেক্ষা করো।
~ আমি এত কিছু জানি না৷ আমি শুধু সবসময় আপনাকে আমার পাশে চাই।
- আমিও। তবে এখন ফ্রেশ হয়ে আসো যাও। আজ অনেক কাজ আছে৷
~ আচ্ছা৷
তাসনুভা ফ্রেশ হতে চলে যায়। এই ফাঁকে আরিয়ান কাকে যেন কল দিয়ে কথা বলতে থাকে। তাসনুভা দশ মিনিট পর বের হলে আরিয়ান ওকে নিয়ে নাস্তা করতে চলে আসে। নাস্তা খাওয়া শেষ হলে আরিয়ান তাসনুভার জন্য বিয়ের ড্রেস অর্ডার করতে বসে। তাসনুভার পছন্দ অনুযায়ী ওর বিয়ের ড্রেস অর্ডার করা হয়৷ রেডিমেড হওয়ায় দুপুরের মধ্যেই বাসায় ডেলিভারি হয়ে যাবে৷ তাসনুভা খুব খুশি৷ আজ ওর বিয়ে হবে৷ ওর বাবা-মাকে আবার দেখতে পারবে৷ আরিয়ানকে একদম নিজের করে পাবে৷ সব মিলিয়ে ও আজ অনেক অনেক বেশি খুশি। কিন্তু তাসনুভা খেয়াল করে আরিয়ান কেমন জানি হয়ে আছে। মনে হচ্ছে অনেক চিন্তা আর চাপের ভিতর আছে। তাসনুভা সেটি বেশ বুঝতে পারছে। ও আরিয়ানের গলা জড়িয়ে ধরে বলে,
~ কি হয়েছে আপনার? এমন লাগছে কেন আপনাকে? কোন সমস্যা?
- না না কই ঠিক আছি তো। কোন সমস্যা নেই।(হাসি দিয়ে)
তাসনুভা আরিয়ানের বুকে মাথা রেখে আস্তে করে বলে,
~ নাতাশা আপুর জন্য মন খারাপ তাই না? আজ উনি থাকলে উনিই সব করতেন।
- বুড়িটা তুমি উলটা পালটা ভাবা বন্ধ করবে? আমি আসলে ভাবছি, আজ বাসর রাতে বউয়ের সাথে কি কি করবো সেটি। হিহি।
তাসনুভা মাথা তুলে লজ্জা পেয়ে বলে উঠে,
~ কিই! কিচ্ছু করতে হবে না৷ চুপচাপ ঘুমাবেন৷ আর আমি আপনার বুকে ঘুমাবো। শেষ।
- এহহহ! বললেই হলো।
~ তো আর কি করবেন আপনি? (অসহায় ভাবে বলল)
- সেটি বাসর রাত আসুক তখনই জানবে। (তাসনুভার কানে কানে বলল)
তাসনুভা লজ্জায় আর অন্যরকম একটি অনুভূতিতে আরিয়ানের বুকে মাথা লুকায়। আরিয়ান ওর মাথার পিছনে হাত বুলিয়ে দেয়। তাসনুভাকে ও কিছুই বুঝতে দেয় নি। ও যে কত বড়ো একটি চাপে আছে তা ওর থেকে বেশি আর কেউ জানে না। ওরা এভাবে গল্প করতে করতে দুপুর হয়ে যায়। তাসনুভার বিয়ের লাল বেনারসি শাড়িও চলে আসে। আরিয়ানের বডিগার্ডরা সুন্দর করে ওদের রুম সাজিয়ে দিচ্ছে৷ আরিয়ান নিজে দাঁড়িয়ে থেকে ওর নিজের মনের মতো করে সাজিয়েছে। তবে তাসনুভা দেখে নি। ওকে অন্য রুমে রেখে এসেছে আরিয়ান।
ঘড়িতে এখন তিনটে বাজে। তাসনুভার আর আরিয়ান হল রুমে অপেক্ষায় বসেছিল তাসনুভার বাবা-মার। একটু পরই একটি বডিগার্ড এসে বলল,
- স্যার ওনারা এসেছেন।
তাসনুভা তো খুশিতে দৌড়ে বাইরে চলে যায়। আরিয়ান পিছনে পিছনে যায়। তাসনুভা বাইরে আসতেই ওর বাবা-মা গাড়ি থেকে বের হয়। ওরা মুখোমুখি হলেই তাসনুভা দৌড়ে কাঁদতে কাঁদতে গিয়ে বাবা-মাকে জড়িয়ে ধরে। তারাও মেয়েকে পেয়ে খুশিতে কেঁদে দেয়। আরিয়ান দূর থেকে দাঁড়িয়ে দেখছে৷ আজ ওর পাশে নাতাশা থাকতে পারতো। কিন্তু এই সিরাজের জন্য নাতাশা ওর বোনটা আজ ওর পাশে নেই৷ আরিয়ান কখনো ওর মাকে দেখেনি৷ শুধু বাবাকে দেখেছে৷ ওর বাবা অনেক ভালো এবং পরিশ্রমী একজন মানুষ ছিলেন। এই বিশাল সম্পত্তি তিনি আরিয়ানকে সাথে নিয়ে গড়েছেন। ছোটকাল থেকেই ছেলেকে বিজনেস সম্পর্কে অনেক কিছু শিখিয়ে বড়ো করেছেন৷ আরিয়ান যখন সফল হতে থাকে ওর বাবা নিশ্চিন্তে দুনিয়া ছেড়ে চলে যান। সেই থেকেই আরিয়ান একদম একা। একমাত্র নাতাশাই ছিল ওর সব৷ আর এখন তাসনুভা। আরিয়ানের চোখে আগুন জ্বলছে নাতাশার জন্য৷ ও সিরাজ খানকে এমন মৃত্যু দিবে যা কেউ কল্পনাও করে নি।
তাসনুভার বাবা-মা তাসনুভাকে নিয়ে আরিয়ানের কছে এসে কান্নাসিক্ত কণ্ঠে বলে,
- বাবা তোমাকে কি বলে যে ধন্যবাদ দিব তা আমাদের জানা নেই। তুমি আমাদের বাচিঁয়েছো।
- আরে আঙ্কেল আন্টি কি যে বলছেন না! এটি ত আমার দায়িত্ব। নিজের স্ত্রীকে সেইফ না রাখলে কাকে রাখবো বলেন?
- সত্যিই বাবা তুমি যে এত ভালো আমরা ভাবতেই পারিনি।
- হয়েছে আগে ভিতরে আসেন। বাইরে থাকা ঠিক হবে না৷
আরিয়ান তাসনুভার বাবা-মাকে নিয়ে ভিতরে চলে যায়৷ তাসনুভা ওর বাবা-মাকে পেয়ে অনেক খুশি। তাসনুভাকে ওর বাবা-মার কাছে দিয়ে আরিয়ান বাইরে বেড়িয়ে পড়ে। তাসনুভা জিজ্ঞেস করেছিল আরিয়ান কোথায় যায়। কিন্তু আরিয়ান ওকে সত্যটি বলেনি৷ আরিয়ান বাইরে যাওয়ার আগে টনিকে বলেছে,
- টনি ওনাদের সবার দায়িত্ব তোমার। আমি না আসা পর্যন্ত জীবন দিয়ে হলেও ওদের সবার খেয়াল রাখবা।
- জি স্যার অবশ্যই। আপনি নিশ্চিন্তে যান।
আরিয়ান ওদের সবাইকে বিদায় দিয়ে চলে আসে। তাসনুভা এদিকে আস্তে আস্তে রেডি হতে থাকে। ওর মা ওকে নিজ হাতে সাজিয়ে দিচ্ছে। সন্ধ্যা ৭ টায় ওদের বিয়ে পড়ানো হবে৷ এখন ঘড়িতে ৬:৪৫ মিনিট বাজে। অথচ আরিয়ানের কোন খবর নেই৷ তাসনুভা রেডি হয়ে ওর রুমে বসে আছে৷ আরিয়ানকে অনেকবার কল দেওয়ার পরও ওর নাম্বার বন্ধ। তাসনুভার কেন জানি এখন খুব চিন্তা হচ্ছে৷ বুকের ভিতরটি কেমন আনচান আনচান করছে৷ একটি অজানা ভয় কাজ করছে। তাসনুভার মুখটি মলিন হয়ে আছে। হঠাৎই বডিগার্ড এসে বলে, আরিয়ান এসেছে৷ তাসনুভার খুশি দেখে কে। ও রুম থেকে বের সোজা নিচে আরিয়ানের কাছে চলে যায়।
সন্ধ্যা ৭ টা বাজে। আরিয়ান রেডি হয়ে তাসনুভাকে সাথে নিয়ে বসে আছে৷ তাসনুভা ঘোমটা দিয়ে একদম বঁধু সাজে আরিয়ানের পাশে বসে আছে৷ একটু পরই টনি কাজী সাহেবকে নিয়ে আসেন। কাজী সাহেবকে সবাই সালাম দেন৷ তিনিও সালামের উত্তর দিয়ে বসেন৷ কাজী সাহেব বসে বলেন,
- তাহলে বিয়েটি শুরু করা যাক।
- জি।
কাজী সাহেব তাসনুভার সামনে বসে তার ব্যাগ থেকে কি যেন একটি বের করতে যান। আর হঠাৎই তিনি একটি পিস্তল বের করে তাসনুভার মাথায় ঠেকিয়ে ধরেন। সাথে সাথে আরিয়ান সহ সবাই স্তব্ধ হয়ে যায়। তাসনুভার বাবা মা কান্না শুরু করে। আরিয়ানের বডিগার্ডরা কাজীর দিকে বন্দুক তাক করলে সে বলে,
- একটু চালাকি করলে ওর মাথার খুলি উড়ায় দিমু। তোরা কি ভাবছোছ আমি আসল কাজী? না। আমি গুন্ডা। আমগো বস আইতাছে তোগো মারতে।
এটি বলেই কাজী একটি ফাঁকা গুলি করে৷ আরিয়ান কাজীর দিকে আর টনির দিকে তাকিয়ে আছে। গুলির পরই একদম নীরাবতা। শ্বাসরুদ্ধকর একটি অবস্থা। হঠাৎ হাত তালি দিতে দিতে কে যেন ওদের বাসার মধ্যে ঢুকে। সবাই তাকিয়ে অবাক। তাসনুভার বাবা বলে,
- রিহান তুমি!
- জি আঙ্কেল আমি।
রিহান কথা শেষ করতেই ওর লোকেরা এসে আরিয়ানের সব বডিগার্ডদের ঘেরাও করে ফেলে। ওদের কাছ থেকে আর্মস নিয়ে যায়। রিহান হাসতে হাসতে বলে,
- কি অবাক হলেন সবাই? আমি এখানে কেন? তোদের সবগুলাকে শেষ করতে এসেছি। বিশেষ করে আরিয়ান আর তোর ভালবাসা তাসনুভাকে।
আরিয়ান কিছু বলছে না৷ রিহান হাসতে হাসতে আরিয়ানের কাছে এসে বলে,
- সেদিন কি যেন বলছিলি, টাকাই সব তাই না? হ্যাঁ একদম ঠিক বলছিলি। এই টাকা আর সম্পত্তির জন্য আমি এই তাসনুভাকে বিয়ে করতে চাচ্ছিলাম। কত সুন্দর একটি প্ল্যান করেছিলাম। কি প্ল্যান শুনবি না? তাসনুভাকে বিয়ে করে ওর বাপের যত যা আছে সব আমার নামে লিখে নিব। তারপর তাসনুভাকে মেরে নদীতে ভাসিয়ে দিব। আর এরপর আমি হলো ১০০০ কোটি টাকার। হাহা। কিন্তু না, তুই এসে মাঝ দিয়া ঢুকে গেলি। আমার সব প্ল্যান নষ্ট করে দিলি। কি ভেবেছিস মাত্র ৫০০ কোটি টাকা দিয়ে তুই আমাকে কিনে ফেলতে পারবি? কখনো না৷ আজকে তোর সামনে এখানে সবাই তোর তাসনুভাকে ধর্ষণ করবে, তারপর আমি ওকে মারবো। শুধু তাই না ওর বাপ মাকেও মাতবো। তুই বসে বসে দেখবি আর কষ্ট পাবি। ওহ! তুই তো এখন এমনিই কষ্ট পাচ্ছিস তাই না। তোর পার্সোনাল সেক্রেটারিকে যে মেরে ফেলছি আমি। অবশ্য সেটির ক্রেডিট সিরাজ খানের। আমি তো বলেছিলা শুধু তাসনুভাকে মারতে। বাট শালায় তা তো পারে নাই৷ মারছে একটি ফকিন্নি মেয়েকে। আমি চেয়েছিলাম তাসনুভাকে শেষ করে দিলে তুই সারাজীবন কষ্ট পাবি। কিন্তু সিরাজের লোকেরা তা পারে নাই। তাই আজকে আমি নিজে তোদের সবগুলোকে শেষ করমু। তোর বিয়ের দিন হবে আজ তোর মৃত্যুর দিন৷ তোর টাকার জোর আজকে আর কাজ দিবে না আরিয়ান। তুই আমার সুন্দর সাজানো প্ল্যানটি নষ্ট করে ফেলেছিস। সবাইকে মেরে লাস্টে তোকে মারবো।
রিহানের এই ভয়ংকর কথা শুনে তাসনুভার বাবা বলেন,
- ছিঃ রিহান ছিঃ যে তাসনুভার সাথে তুমি একসাথে বড়ো হয়েছো, তোমার বাবা আমার এত ভালো বন্ধু আর সেই তুমি এত জঘন্য কিভাবে হলে?
- হাহা আঙ্কেল টাকা। টাকার নেশায় আমি এমন হয়েছি। আমার টাকা চাই। অনেক অনেক টাকা। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড়ো ধনী হবো আমি। তোদের দুইটাকে মেরে। হাহা।
রিহান হাসতে হাসতে তাসনুভার কাছে গিয়ে ওকে তুলে আনে। তারপর ওকে দাঁড় করিয়ে ওর চার পাশে ঘুরতে থাকে। আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে বলে,
- এখন সবার সামনে ওর সব জামা কাপড় খুলে ফেলবো। কিরে তুই কিছু করবি না? হাহা। কিছুই করতে পারবি না তুই। শুধু বসে বসে বউয়ের ইজ্জত শেষ করা দেখবি।
আরিয়ান শুধু তাকিয়ে আছে। রিহান হাসতে হাসতে বলে,
- দাঁড়া আগে ওর এই ঘোমটা খুলে নি। তারপর সব খুলবো।
এই বলে যেই ঘোমটা খুলে রিহান তাকিয়ে দেখে একটি ছেলে। আর সাথে সাথে ছেলেটা ওর দিকে পিস্তল তাক করে। রিহান ভীষণ বড়ো একটি ধাক্কা খায়৷ ও অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে দেখে ও মুচকি হাসছে। রিহান চিৎকার করে বলে,
- তাসনুভা কই?
হঠাৎই উপর থেকে কে যেন বলে উঠে,
~ জানোয়ার তোর উপরে।
রিহান উপরে তাকিয়ে দেখে তাসনুভা দাঁড়িয়ে আছে। ও সিড়ি দিয়ে নামতে নামতে বলে,
- উনি আমাকে বলেছিলেন তুই অনেক খারাপ। কিন্তু বিশ্বাস করি নি। কিন্তু আজ আর বিশ্বাস না করে পারলাম না। এতটা খারাপ তুই কখনো ভাবতে পারি নি। তোর মতো জানোয়ারের কখনো বেঁচে থাকার অধিকার নেই। তোর জন্য ওনার বোনটা মারা গিয়েছে। কি ভেবেছিস খুব সহজে তোকে ছেড়ে দিবে সে? কখনো না। আজ শেষ দিন আমাদের না তোর।
রিহান অস্থির হয়ে বলে,
- আগে তুই বেঁচে নে তারপর আমাকে মারিস৷ ওই সবাইকে শেষ করে দে। একটিও যেন বেঁচে না থাকে।
রিহানের আদেশ করা মাত্রই ওর লোকেরা ওর দিকে বন্দুক তাক করে। শুধু তাই না আরিয়ানের লোকেরাও রিহানের দিকে বন্দুক তাক করে। আর যে কাজীটা তাসনুভাকে মারতে চেয়েছিল তার কাছ থেকে আরিয়ান পিস্তলটি নিয়ে ব্যাটার মাথা ফাটিয়ে দেয়। রিহান ওর পিস্তলটি বের করতে নিলে সেকেন্ডের ভিতর ওর পায়ে ঠাস ঠাস করে ৪/৫ টি গুলি করে দেয় আরিয়ান। তারপর ও আস্তে আস্তে রিহানের কাছে যায়। গিয়ে ওর সামনে বসে বলে,
- আমার ভালো দিকটি দেখে ভেবেছিস আমি খুব দূর্বল? নারে পাগল না৷ আমি একটি সাইকো। আমার হবু বউই আমাকে সাইকো নাম দিয়েছে। আমি নিজে আর কি বলবো বল। আমি আগেই বুঝেছিলা সিরাজ খানের সাথে কেউ একজন আছে। আর সেটি যে তুই সেটি আগে বুঝিনি৷ কিন্তু এই তো কিছু আগে যখন সিরাজ খানের ১২ টা বাজিয়ে আসি তখন সে তোর কথা বলেছে। তোর সব প্ল্যানের কথা বলে দিয়েছে। তোর এই গুন্ডাদের তোর দেওয়া ৫ গুণ দামে আমি কিনে নিয়েছি। টাকা সব পারে। কখনো কাউকে ধ্বংস করতে কখনো কাউকে বাঁচাতে৷ আজ এই টাকা তোকে শেষ করে দিল। গেইমটি তুই শুরু করলেও শেষ আমি করবো। তোর মৃত্যু দিয়ে৷ তোর বেঁচে থাকার কোন অধিকার নেই৷ কি যেন বলছিলি, আমার তাসনুভাকে পানিতে ভাসিয়ে দিবি মেরে। ওই ওকে জিন্দা পানির নিচে ভাসিয়ে দে৷ যাতে ও চেয়েও আর উঠতে না পারে৷ যাহ।
- ওকে স্যার।
- আরিয়ান আমাকে মাফ করে দে। আমি মরতে চাই না। আমার ভুল হইছে। প্লিজ ভাই আমাকে মাফ করে। তাসনুভা প্লিজ আমাকে মাফ করে দেও। প্লিজ...
~ তুই যদি শুধু আমাকে মারতে চাইতি তাহলে হয়তো মাফ করতাম। কিন্তু তুই ওনার বোনকে ছিনিয়ে নিয়েছিস ওনার কাছ থেকে। তোর মৃত্যুই তোর শাস্তি।
আরিয়ানের লোকেরা রিহানকে নিয়ে যায়৷ সিরাজকেও এর চেয়ে ভয়ংকর শাস্তি দেওয়া হয়েছে। সবাই চলে গেলে তাসনুভা কেদে আরিয়ানকে জড়িয়ে ধরে। তাসনুভা ভাবেও নি রিহান এতটা খারাপ। মানুষ যে এভাবে মুখোশধারী হতে পারে তা ওদের জানা ছিল না। তাসনুভার মাথার পিছনে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলে,
- আর কোন ভয় নেই তোমার। বলেছি না তোমার সব শত্রুকে আমি শেষ করে দিব৷
~ আপনি সত্যিই অনেক ভালো।
- এখন ছাড়ো শ্বশুর শ্বাশুড়ি দেখছে।
তাসনুভা লজ্জায় আরিয়ানকে ছেড়ে দেয়। ওর বাবা-মা হাসতে হাসতে এসে বলে,
- বাবা তোমার হাতে আমাদের মেয়েটিকে তুলে দিতে চাই।
- জি আঙ্কেল অবশ্যই। তার আগে চলেন ঢাকা যাই। সেখানে ধুমধাম করে আমাদের বিয়েটা হবে৷ কাল সন্ধ্যায় সত্যি সত্যিই আমাদের বিয়েটি হবে৷ আমি সব ব্যবস্থা করে এসেছি। একটু পরই হেলিকপ্টার আসবে৷
তাসনুভা খুব খুশি হয়ে বলে,
~ ওরে আমার সাইকোপ্যাথ বরটা।
- হাহা। (সবাই হেসে দেয়)
এরপর ওরা ঢাকায় আসলে অনেক বড়ো আর ধুমধাম করে আরিয়ান আর তাসনুভার বিয়েটা হয়। ওরা দুজন শেষমেশ নাতাশার ইচ্ছাটি পূরণ করতে পেরেছে। ওরা পেরেছে শত বাঁধা পাড় করে এক হতে। তাসনুভা ওর রোমান্টিক সাইকোপ্যাথ বরটিকে একদম নিজের করে পেয়েছে। এখন তাদের প্রতিটি মুহূর্ত রোমান্টিক ভাবে কাটে।
--সমাপ্ত--
লিখেছেন: আবির
সাইকোপ্যাথ গল্পের সকল পর্ব:
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন