আমার বিয়ের এক সপ্তাহ হয়ে যাওয়ার পরেও আমার সাথে উনার সম্পর্ক খুব স্বাভাবিক। প্রতিদিন আমি রাতে খাওয়া দাওয়ার পর আমার দেবর ননদদের সাথে হাসি ঠাট্টা শেষে রাত বারোটার দিকে ঘুমাতে আসি। আর আমার স্বামী আমায় দেখে দ্রুত বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ায় যেন আমি তার অফিসের বস। আমি যেন এক্ষুনি তাকে বকা লাগাবো। আমি বিছানার উপর বসে থাকি অল্পক্ষণ।
তারপর হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেস হয়ে ঘুমাতে যাই। ততক্ষণে মশারি টানিয়ে ফেলেন উনি।
বিছানার উপর মশারি গুজতে গুজতে লাজুক স্বরে বলেন: "বহুদিনের অভ্যাস বুঝলা?"
"আর আমি না ঝেরে মশারি টানাই না। বিশ্বাস করো মশারির ভিতরে একটাও মশা থাকবে না। নাদিয়া তুমি এখানে আরামে ঘুমাতে পারবা।"
আমার তখন ইচ্ছে করে ফিক করে হেসে ফেলি। তবে অনেকটা ইচ্ছে করেই মুখটা গোমড়া বানিয়ে রাখি।
বিছানায় পরিস্কার মশারি আর সারা ঘর জুড়ে হালকা এয়ার ফ্রেসনারের গন্ধ। যদিও আমার মন্দ লাগে না। তবে আমার স্বামী এখনো কেন স্বামী সুলভ আচরণ করছে না, সেটার কারন আমি ভেবে পাই না।
ফোন টেপাটেপির অভ্যাস আমার কম। তবুও আমি কিছুক্ষণ নেটে থাকি। তারপর আবার লজ্জায় পড়ে যাই, এত রাতে আমার নামের পাশে সবুজ বাতি দেখলে সবাই কি ভাববে? আর উনি অপেক্ষা করেন।
উনি মানে আমার স্বামী ‘জনি‘।
একসময় উনি কথা বলা শুরু করেন তার ভার্সিটির মজার মজার গল্প।
কোন স্যারকে কি নামে ডাকা হতো, কার প্রেমিকাকে ভুল লাভ লেটার সাপ্লাই করা হয়েছিল এইসব।
আমিও তার কথার টুকটাক জবাব দেই। আগামীকাল বিকেল বেলা আমরা জামালপুর চলে যাবো। উনার ওখানেই পোষ্টিং।
বাবা আমায় ফার্নিচার দিতে চাইলে উনি তখন একটু বিরক্ত হলেন সম্ভবত। মাথা নিচু করে বললেন: "আমাদের বাড়িতে আপাতত কিছুর দরকার নেই। যদি প্রয়োজন হয় আমি অবশ্যই আপনাকে জানাবো।"
পরদিন আমাদের চলে যাওয়ার সময় বিদায় দিতে আমাদের বাসা থেকে সবাই এলো। আমার বড় আপা আমার দিকে তীক্ষ্ণ চোখে খানিকক্ষণ চেয়ে কি দেখলেন আল্লাহ জানে।
তারপর ফিসফিস করে বললেন, "এই নাদিয়া তোদের মাঝে ওই সব হয়নি?"
:"ওইসব, আবার কোন সব?"
: "আহ, বোঝে না ন্যাকা। স্বামী স্ত্রীদের মাঝে যা হয় আর কি!"
তখন আমি চুপ করে রইলাম। আমার বোন ঝড়ের বেগে দৌরে ড্রয়িংরুমে চলে গেলেন। সম্ভবত সবাইকে এসব জানাতে। আর আমি লজ্জায় একশেষ। ও আমাদের বাড়ির সকল গেস্ট আসা উপলক্ষে প্রচুর আয়োজন করেছে। সে নিজে গিয়ে তাজা মাছ কিনে এনেছে। দোকানে দোকানে খুঁজে খুঁজে ভালো দই ও ফিরনির জন্য খাঁটি দুধ নিয়ে এসেছে।
আর আমার ননদেরা আমাকে দামি একটা শাড়ি পরিয়ে দিয়েছে। তবে আমি আবার শাড়ি ভালো পরতে পারি না। সেই সম্ভবত বোনেদের বলেছে। তার বোনেরা অতিথি কেউ বাড়িতে বেড়াতে এলেই দৌঁড়ে আমার রুমে আসে। আমাকে শাড়ি পরিয়ে সুন্দর ভাবে সাজিয়ে ভাইয়ের দিকে তাকায়। তখন ওর ভাই তখন আমার দিকে লাজুক চোখে চেয়ে বলে, মেহমান এসেছে।
নাদিয়া তুমি অস্বস্তি বোধ করলে বেশিক্ষণ থেকো না। আমি সব ম্যানেজ করবো। ও হ্যাঁ এই শাড়িটায় তোমায় অদ্ভুত মায়াবী লাগছে। তুমি এই রঙের আরো একটা শাড়ি কিনে নিও। যা কিছু সুন্দর সেটা দুটো হওয়া উচিৎ। যেন একটা নষ্ট হলে আরেকটা থাকে।
যাই হোক তখন দুলাভাই উনাকে আমার রুমে ডেকে এনে রীতিমত জেরা শুরু করলেন। " আচ্ছা তোমাদের সমস্যা কি?"
"আসলে সমস্যাটা কার? " এরকম হেনতেন নানান প্রশ্ন। আর আমি তখন লজ্জায় লাল হচ্ছি। উনাকে দেখলাম বেশ সাবলীল ভাবেই সব উত্তর দিচ্ছে। দুলাভাইকে সে সুন্দর করে বুঝিয়ে বলল "আমারই তো বউ, এতো তাড়াহুড়োর কি আছে?"
একটু পর দুপুরে খাওয়া শেষ করার সাথে সাথেই আমাদের নিতে গাড়ি চলে এলো। যাওয়ার সময় আমার শ্বাশুড়ি খাবারের ব্যাগ দিতে চাইলেন সাথে। ও খুব আস্তে না করলো। তারপরেও আমাদের টুকটাক জিনিস প্রচুর হয়ে গেল। ও শুধু আমার আর নিজের কাপড়ের ব্যাগেজগুলি গাড়িতে ওঠালো।
আমাদের বাড়ি থেকে আনা জিনিসগুলি ওদের বাড়িতে আর ওদের বাড়ির সব জিনিস যা আমাদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছিল সব আমাদের বাড়িতে পাঠিয়ে আমার পাশে গাড়িতে উঠে বসলো। আমার কেন জানি ভীষণ কান্না পাচ্ছিল। এই অদ্ভুত লোকটার সঙ্গে একটা বাড়িতে একা থাকবো কি করে কে জানে?
জামালপুরের বাড়িটা বেশ চমৎকার। খুব গোছানো। উনি খুব গোছানো টাইপের বোঝা যায়। বিয়ের প্রস্ততি স্বরুপ উনি শুধু বাড়িই নেয়নি। টু বেডরুমের বাড়িতে ডাইনিং, ড্রয়িং সহ যেখানে যে আসবাব থাকা দরকার সবই আছে। সবচেয়ে আশ্চর্য বিষয় হচ্ছে রান্নাঘরে বেলন পিঁড়ি থেকে শুরু করে ব্লেন্ডার পর্যন্ত আছে।
সব জিনিস তকতক করছে। এতে আমার হঠাৎ মনটা ভালো হয়ে গেল। সে নিজেই আমায় চা বানিয়ে খাওয়ালো। সাথে ছিল কেক আর গরম শিঙাড়া। এগুলো সব আসার পথে কেনা। সে শিঙাড়ার কোণা দেখতে দেখতে বললো "পাকা হাত না, পাকা হাতের শিঙাড়ার কোণা এতো ভোঁতা হয় না। আমি একটু ফিক করে হেসে ফেললাম। সে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে কেকের ডেট দেখে তারপর আমাকে খেতে দিল। যেন আমি তার বাড়ির বিশিষ্ট অতিথি, ত্রুটি দেখলে এখুনি রাগ করে চলে যাবো।
সেদিন রাতে সে আমায় গোসলে পাঠিয়ে রান্নাঘরে খুঁটখাট শুরু করলো। আমিও কিছু বললাম না। কাপড় আলমারিতে গুছিয়ে আমি স্নান করতে চলে গেলাম। এসে দেখি ‘ ভাত, আলু ভাজি, ডিম ভুনা আর ডাল ভর্তা। সে টেবিলে খাবার রেডি করছে।
আমায় দেখেই সে হেসে বললো, "নাদিয়া তুমি কি একটু বাইরে অপেক্ষা করবে, আমি স্নান করে আসি?"
আমি হেসে বললাম "আচ্ছা"
মানুষটাকে এই প্রথমবার তুমি ডাকলাম ভালোই লাগলো। রাতে আবার গল্প।
আজ তার একটু উন্নতি হয়েছে। রাতে আমার ঘুম আসছিল না। সে ভীষণ যত্ন করে আমার চুলে বিলি কেটে দিল। কখন ঘুমিয়ে গেছি মনে নেই। সকালে দেখি খিঁচুড়ি আর ডিম ভাজি, বেগুন ভাজি সহযোগে নাস্তা রেডি।
গ্লাসের নিচে একটা চিরকুট ‘ লামিয়া, তুমি খেয়ে নিও। আমি বিকেলে আসার সময় বাজার করে নিয়ে আসবো। তুমি চুলা ধরিও না।
এর মাঝে ক্ষিদে পেলে। কৌটায় বিস্কিট আছে। কালকের বাসি কেক খেও না ওটায় ভেজাল তেল দেয়া খেয়েই বুজেছি। :
বউয়ের কাছে স্বামীর কি অদ্ভুত চিঠি। তাও আবার প্রথম চিঠি। আমি হাসবো না কাঁদবো।
এরপরের তিনদিনে বুঝে গেলাম, আমার স্বামী ভোজন প্রিয় না তবে খাদ্য রসিক। সে শুধু খেতে না রাঁধতেও ভীষণখুব পছন্দ করে। অফিস থেকে ফিরেই মাছ কাটে। আমি সব্জী কেটে দিলে সে হাসে। তবে হাসির ধরণ দেখে বোঝা যায়। সে আমার চেয়ে অনেক ভালো সব্জী কাটতে পারে। না চেখেও সে তরকারিতে ঠিকঠাক লবণ দেয়। রান্নার রঙ কেমন হয়েছে আমাকে বারবার জিজ্ঞেস করে।
এই তিনদিনে লাউ দিয়ে শোল মাছ, পুঁটি মাছ ভাজা, গরুর পায়া, মুরগির কোরমা এসব কঠিন রান্নাগুলোই সে করছে। সপ্তম দিনে আমি হঠাৎ সকালে বললাম ‘ আজ পিৎজা খেলে কেমন হয়? ‘ সে হেসে বললো খুবভীষণ ভালো হয়।
আমারো কেন জানি আজ পিৎজা খেতে মন চাইছে। আচ্ছা আমি বিকেলে ফিরে আসি।
প্রায় সন্ধ্যা শেষ করে মানুষটা ঘরে ফিরলো। রাগে দুঃখে আমার চোখে পানি চলে এলো। তিনবার টোকা দেয়ার পরেও যখন দরজা খুললাম না। তখন শুনলাম সে ওপাশ থেকে বলছে, "আল্লাহ, মাফ করো। আল্লাহ মাফ করো কোন অঘটন যেন না হয়।"
আমি দ্রুত দরজা খুলে দিলাম।উনার দুই হাত ভর্তি নানান পদের বাজার। এ আর নতুন কি!
সে প্রথমে গোসলে গেল। তারপর আমি ওভেনে খাবার গরম করলাম। সে উপদেশ দিতে থাকলো : "আমি বাড়িতে না থাকলে তুমি, চুলা ধরাবে না। টুকটাক কিছু খাবার ওভেনে গরম করলেই চলবে।"
আমি কিছু বললাম না। সে ডাইনিং টেবিলে মনোযোগ দিয়ে কি সব করছে। আমি রুমে এসে বই পড়া শুরু করলাম। মানিক বন্দোপধ্যায় এর ‘ অতসী মামি ‘ স্টোরিটা যতোবার পড়ি চোখে পানি আসে। এমনও প্রেম হয়! তাও আবার স্বামী স্ত্রীর!
একটু পরেই সে ডাকতে লাগলো ‘ লামিয়া আসো দেখে যাও, কি বানিয়েছি। ‘ উনার কপালে ঘাম। আমি গিয়ে দেখি মস্ত এক পিৎজা। শুধুমাত্র শুনে বা ইউটিউব দেখেও যে এতো সুন্দর পিৎজা বানানো যায় প্রথম দেখলাম। কারণ আমি জানি জামালপুরে ভালো পিৎজার দোকান নেই। আমার বর সাহেব তাই আমাকে খুশি করতে সরাসরি পিৎজা বানিয়েই খাওয়াচ্ছেন। আমি পিৎজাটি সুন্দর করে কাটলাম।
আজ সন্ধ্যায় কিছু রান্না করা হয়নি। তাই পিৎজাই আমাদের রাতের খাবার। সে যখন তোয়ালে কাঁধে চাপিয়ে আমায় খেয়ে নিতে বলে আবারো গোসলে গেল। তখনই আমার একটু খটকা লাগলো। আমি শোবার ঘরে এসে দেখি সে শুয়ে আছে। মুখ টকটকে লাল।
অপরাধির মত আমায় বলল ‘ মনে কিছু নিও না। পিৎজা খুব ভালো খাবার, তুমি খাও। আমার শরীরটা একটু ম্যাজম্যাজ করছে। পরে উঠে ভাত রান্না করবো। উনার মায়া মাখা কথা শুনে বুকের কোথায় একটা ধাক্কা লাগলো।
আমি আস্তে উঠে রান্নাঘরে গেলাম। ঝকঝক করছে চারদিকে। সহজেই চালের কৌটা খুঁজে পেলাম। ফ্রিজ খুলে দেখি ছোট ছোট বক্সে হলুদ লবণ মাখানো ইলিশ মাছ পিস করে রাখা আছে। একটা বড় রুই মাছের মাথা কেটে ধুয়ে পরিস্কার করে রাখা আছে।
আমি ভাত রান্না করে কয়েক পিস ইলিশ মাছ ভেজে নিলাম। মুগডাল দিয়ে মাছের মাথার মুড়িঘণ্ট করলাম। একটা বেগুন পুড়িয়ে ভর্তা করলাম। ফ্রিজ থেকে শশা বের করে কুঁচিয়ে রাখলাম। সব টেবিলে দিয়ে তাকে ডাকতে গেলাম। দেখি মানুষটা জ্বরের ঘোরে শুধু কাঁপছে।
দ্রুত জ্বর মেপে আমার মাথায় হাত ১০৩ :৫। দ্রুত সিদ্ধান্ত নিলাম। বালতি করে জল না এনে বড় মগে করে জল এনে রুমেই বালতি পুরো করলাম। তারপর পুরো শরীর স্পঞ্জ করে দিতে থাকলাম । সাথে প্রায় দুই ঘণ্টা অনবরত মাথায় জল ঢাললাম। একসময় মনে হলো শরীর ঘাম দিচ্ছে। জ্বর মেপে দেখি ১০০:৫। সে এবার চোখ মেলল লজ্জিত স্বরে বলল ‘ তোমায় খুব খাটালাম। ‘
চুপ করে শুয়ে থাকো বলে আরেকবার গা মুছিয়ে দিলাম। লোকটা আশ্চর্যরকম ফর্সা। কি নিঁটোল পিঠ।
অদ্ভুত মায়া জাগানো হালকা লোমশ বুক। আমার তখন ভীষণ লজ্জা লাগছিল। আমি চোখ ফিরিয়ে নিয়ে বললাম। একটু উঠে আসো। অল্প কিছু রান্না করেছি। আমি তো তোমার মতো পাকা রাঁধুনি না। একটু খেয়ে ওষুধ খাও।
সে অবাক চোখে আমার দিকে চেয়ে রইলো। তারপর আমার হাত ধরেই খাবার টেবিলে এলো। একটু অস্বস্তি লাগলেও আমি হাত সরিয়ে নিলাম না। টেবিলে এসে উনার চোখ কপালে উঠলো ‘ বুনো তুমি রাঁধতে পারো? ‘
কার স্বামী ভালোবেসে উনার বউকে কি ডাকে আমি জানি না। উনি আমায় প্রথম থেকেই বুনোফুল বলে ডাকে। বুনোফুল নাকি উনার ভীষণ প্রিয়। সে টেবিলে বসে খাচ্ছে। এই প্রথম আমি তাকে পরিবেশন করছি। উনি ভীষণ মনোযোগ দিয়ে খাচ্ছেন। ইলিশ মাছ আর মুড়িঘণ্ট যেভাবে তৃপ্তি নিয়ে খেলেন। আমার মনটা ভরে গেলো। বেগুন ভর্তা মাঝে মাঝে নিচ্ছেন আচারের মতো। আমি অবাক হয়ে দেখছি। আস্তে আস্তে উনার চোখে জল জমছে।
‘ বুঝলে বুনো, গত ২২ বছরে আমায় কেউ এতো যত্ন করে খাওয়ায়নি। আমি তোমায় রাঁধতে দেই না কেন জানো? আমি যখন খুব ছোট। তখন আমার মা রাঁধতে গিয়ে আগুনে পুড়ে মারা যান। আমি মানুষ হয়েছি দাদির কাছে উনার মৃত্যুর পরে বাবা বিয়ে করেন। আমি স্কুল থেকে বাড়িতে ফিরে ভাত চাওয়ার সাহস পেতাম না। রান্নাঘরে কোন শব্দ হয় কি না তার জন্য কান পেতে থাকতাম। দয়া করে কেউ খেতে দিলে খেতাম, নইলে না। আমি যখন ভার্সিটিতে পড়ি সকালে নাস্তার টাকা থাকতো না। বন্ধুরা সকালে নাস্তা করার সময় কেউ আমায় ডাকলে নাস্তা হতো নইলে না। টিউশনি করতাম। উনারা কিছু খেতে দিলে কি যে ভালো লাগতো। মানুষটা বলেই চলেছে।
আর আমার চোখ দিয়ে টপটপ করে জল পড়ছে। হঠাৎ আমার দিকে তাকিয়ে সে ভীষণ বিব্রত হলো।
নাহ, তুমিতো দেখছি খুবই নরম মনের মেয়ে। ইস সব কথা একদিনে বলে তোমায় কি কষ্টই না দিলাম।
খাওয়া শেষে সে বাসনগুলো বেসিনে নিয়ে যাচ্ছিল। ‘ আমি হাত থেকে বাসন কেড়ে নিয়ে বললাম, ফের যদি রান্নাঘরে খাওয়া ব্যতিত ঘুরঘুর করতে দেখি। খবর আছে। দ্রুত বাসনগুলো পরিস্কার করে রুমে এলাম।
সে কাত হয়ে একটা চাদর জড়িয়ে শুয়ে আছে। আমি আস্তে উনার চাদরের ভেতরে ঢুকে গেলাম। আলগোছে সে আমায় বুকের মাঝে জড়িয়ে নিলো। ‘ এই এই তুমিতো আমায় বুকের মাঝে পিষে ফেলছো। কে শোনে কার কথা!
এক সময় আমি শুয়ে আছি। সে আমার চুলগুলো হাতে পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে রোল বানাচ্ছে।
আমি উনার দিকে তাকাতেই সে মৃদু হাসলো। ‘ আমি তাকে জড়িয়ে ধরে বললাম ‘ এই তুমিই না একদিন বলেছিলে ‘ যা কিছু সুন্দর সেটা দুটো হওয়া উচিৎ। যেন একটা শেষ হয়ে গেলেও আরেকটা থাকে। ‘
সে বিপুল উৎসাহে আমাকে বুকে টেনে নিতে নিতে বললো ‘ ভুল বলেছিলাম, যা কিছু সুন্দর তা হওয়া উচিৎ অফুরান। ‘
‘ভালোবেসে যদি সূখ নাহি , তবে কেন, তবে কেন মিছে এই ভালোবাসা।
-আদৃতা
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন