বুধবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২

ওগো বিদেশিনী

স্কলারশীপ পেয়ে কানাডা চলে এসেছি তবে বাংলাদেশকে ভীষণ মিস করি। এখানে যতোই চেরি ব্লসম দেখি না কেন বাংলাদেশের কাশফুলকে ভীষণ মিস করি। যতোই এখানে তুষারপাত দেখি না কেন বাংলাদেশে শীতের সকালে ঘুম থেকে উঠে গরম গরম চা খাওয়ার মজাটা ভীষণ মিস করি।

যতোই এখানে ম্যাসড পটেটো খাই না কেন আলুর ভর্তা দিয়ে ভাত খাওয়ার মজাটা ভীষণ মিস করি। ইচ্ছা ছিল একটা বাংলাদেশি মেয়েকে বিয়ে করব তবে আমার বাবা মায়ের ইচ্ছা ছিল আমি এই দেশের কোনো মেয়েকে বিয়ে করে যাতে এখানেই সেটেল হয়ে যাই। বাবা মায়ের কথাও একেবারে ফেলতে পারিনি তাই আমি মারিয়াকে বিয়ে করেছি। মারিয়ার সাথে আমার এক রেস্টুরেন্টে দেখা সেখান থেকেই আলাপ তারপর প্রেম। মারিয়ার জন্ম বাংলাদেশে হলেও ওরা এখন কানাডাতেই সেটেল। তবে বড় হওয়ার পর থেকে মারিয়া কখনো বাংলাদেশে যায়নি। আমার থেকেও মারিয়া খুব বেশি এক্সসাইটেড! কারন আজকে মারিয়াকে কাশফুল দেখাতে নিয়ে যাবো আবার ম্যাডাম নাকি নৌকা দিয়েও ঘুরবে কতো কী আবদার তার। এখন রেডি হচ্ছি একটু পর আমার বিবি সাহেবাকে নিয়ে রওনা দেব।

যদিও কাশফুলে গোলাপ ফুলের মতো ঘ্রান থাকে না তবুও কাশফুল আমার ভীষণ পছন্দের।

মারিয়া:ওয়াও খাশফুল গুলো ভীষণ কিউত!

 আমি: উফ মারিয়া ওটা খাশফুল না কাশফুল!

যেহেতু ছোট বেলা থেকে মারিয়া বিদেশের মাটিতে বড় হয়েছে তাই মোটামুটি বাংলা বলতে পারলেও কত গুলো শব্দ বলতে পারে না। তবে ভুল হলে আমি শিখিয়ে দেই। এই মারিয়া তাকাও তো একটা ছবি তুলি! কিন্তু ম্যাডাম সাহেবা তার চুল ঠিক করতে ব্য ব্যস্ত আমি তাড়াতাড়ি করে ঝটপট কতোগুলি ছবি তুলে নিলাম। মারিয়া শাড়ি পরলে কেউ বলতে পারবেনা ও ভীনদেশী।এটাই মনে হয় বাঙালী নারীদের সৌন্দর্য। শাড়ি পরলে সব মেয়েকেই ভীষণ সুন্দর লাগে বিশেষ করে কালো কিংবা শ্যামলা যারা।

 মারিয়া: জব্বার ওই দেখো ফুচকা আমি সোশাল মিডিয়াতে অনেক দেখেছি আজকে টেস্ট করবো। মহারানীর আবদার শুনে তাকে ফুচকা ওয়ালার কাছে নিয়ে গিয়ে ফুচকা খাওয়ালাম। মারিয়া ঝাল খেতে পারে না তাও ফুচকা ওয়ালাকে বেশি করে ঝাল দিতে বলেছে কারন এটা নাকি আমাদের বাঙালি মেয়েদের ট্রেডিশন।বেচারি এখন ঝালে উহ আহ করছে। মারিয়া আমাকে অনেকবার আই লাভ ইউ বললেও এখনো পর্যন্ত ভালোবাসি বলেনি তাই আমি মারিয়ার কাছে গিয়ে বললাম মারিয়া বলোনা ভালোবাসি!

মারিয়া:  আমি তোমারে যে বালা ফাই! 

ওরে যে এখনো ভালোমতো বাংলা বলতে পারেনা সে সিলেটি ভাষা শিখে গেছে। আমার কথা শুনে মারিয়া তখন লজ্জায় আমার বুকে মুখ লুকালো। 


রাইটার: নুজহাত আদিবা

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন