মেয়েরা সবচেয়ে বেশি পছন্দ করে তার প্রিয়মানুষকে নিয়ে গল্প করতে, তার প্রশংসা করতে। বন্ধুমহল হোক বা নিজের আপনজনের কাছে ,তারা বুক ফুলিয়ে বলতে ভালোবাসে, এই জানিস আজ না তোর ভাইয়া আমায় নিজের হাতে খায়িয়ে দিল। অথচ বিয়ের পর ছেলেরা যখন বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেয়, চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে বিদ্রুপ করেই বলে, কি বিয়ে করলাম, চা ও ভালো করতে বানাতে পারেনা। বাসায় স্বাধীনতা একটুও নেই, হেন নেই তেন নেই।
আর মেয়েরা? বান্ধবীর হাতে চায়ের কাপ তুলে দিতে দিতেও বলবে, জানিস এই কাপ এর সেটটা তোর ভাইয়া আমার পছন্দে কিনেছে।
মেয়েরা আর কারো প্রশংসা না করতে ভালোবাসলেও তার প্রেমিক কিংবা স্বামী এদের প্রশংসা করে তৃপ্তি পায়। কখনো যদি প্রেমিক বা স্বামী সামান্য টাকার উপহার ও দেয় সেটাও দেখবেন মেয়েরা বার বার বান্ধবীকে বলতে ভুলেনা। এতে মেয়েরা অনেক সুখ খুঁজে পায়। তবে আমার জানা নেই পুরুষ এমন করে কিনা। তবে ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা খুব যত্ন করে ভালোবাসতে চায়। যে ভালোবাসতে গিয়ে এক সময় মেয়েটি নিজে অযত্নে ভুগে।
এমন অনেক দেখবেন, স্বামীর সম্মানে আঘাত করার অপরাধে মেয়ে তার চিরচেনা ঠিকানা বাবার ঘরে আসা বন্ধ করে দেয়। কখনো যদি কোন ছেলে তার বউকে বলে তোমার ভাই আমায় অপমান করেছে। স্ত্রী চোখ বন্ধ করে তার ভাইয়েরর সাথে আর সম্পর্ক রাখেনা। মেয়েরা ধরেই নেয়, স্বামীর সংসার মানে আমার সম্মান।
বিপরীতে যদি কখনো কোন মেয়ে শ্বশুরবাড়িতে অপমানিত হয় ও তার স্বামী প্রথম ই বলবে মানিয়ে নেও। মানিয়ে নিতে নিতে তারা সব কিছুতেই মানিয়ে নেয়া শিখে যায়। এভাবেই প্রিয়মানুষটির অবহেলার সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে নিতে দিনের পর দিন নিজেকে গুটিয়ে নেয়। স্বামীর হাজারো অভিযোগ, ডালে হলুদ নেই, মাছ এ লবন নেই, ভাত শক্ত তো বিছানা গুছানো নেই! এসব শুনতে শুনতেও কখনো যদি ভুল ক্রমে স্বামীর মুখে যদি শুনে, আজ তরকারিটা বেশ হয়েছে। তাহলেই ব্যাস! তার সারাদিনের ক্লান্তি নিমিষে কেটে যায়। তখন খুশিতে মেয়েটিকে গুনগুন করে গান গাইতে শোনা যায়। স্বামীর জন্য হাত পুড়িয়ে বারো মাস রান্না করলে হয়ত মাসে একবার প্রশংসা শুনলেও শুনতে পারবেন তবে অভিযোগই বেশি থাকে। কিন্তু হঠাৎ কোন স্বামী তার স্ত্রীর জন্য তিতা, অখাদ্য চা করে আনলেও মেয়ের চোখের কোনে জল জমে। তখন আশেপাশের ভাবি, বন্ধু মহলকেও তা জানিয়েও শান্তি না পেয়ে ছবি তুলে পোষ্ট দিয়ে দেয় জামাইর হাতে চা।
আর সামান্য এ পোষ্টে মানুষ শুধু রিয়্যাক্ট কমেন্টই খুঁজে পায় কেউ মেয়েটার উপলব্ধি খুঁজে পেতে চায় না। যেমন ভাবে ছেলেটি কখনো তার বউয়ের অভিমান গলা চোখের পানির হিসেব রাখেনা।
লেখিকা: উম্মে নিপা
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন